বরগুনার আমতলীতে বিধবাকে নৃশংসভাবে পুড়িয়ে হত্যা

বরগুনার আমতলীতে বিধবাকে নৃশংসভাবে পুড়িয়ে হত্যা

মোঃ হাইরাজ বরগুনা প্রতিনিধিঃ বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামে। বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগমকে (৬৫) নৃশংসভাবে পুড়িয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক ইউপি সদস্য সামসুদ্দিন হাওলাদারের ছেলে শাখওয়াত হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় এনেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছে। ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার গভীর রাতে বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের বৃদ্ধা বিধবা মনোয়ারা বেগম একটি খরের ঘরে একা বসবাস করতেন। বিধবা মনোয়ারা এলাকায় ঝিয়ের কাজ করে দিনাতিপাত করতো। শুক্রবার রাতে ছোট ভাই আবদুর রাজ্জাক খাঁনের পার্শ্ববর্তী বাড়ীতে রাতের খাবার খেয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে ওই ঘরে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনের লেলিহান শিখায় মনোয়ারা বেগম পুড়ে দগ্ধ হয়ে মারা যায়। পুড়ে ছাই হয়ে যায় তার ঘরটি। শনিবার ভোরে আবদুর রাজ্জাক খাঁন বৃদ্ধা বোনের খোঁজ খবর নিতে গেলে। ঘর পোড়া দেখে ডাক চিৎকার দেয়। তার ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে পুড়ে ছাই হওয়া ঘরে মনোয়ারা দগ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছে। এ ঘটনায় নিহত মনোয়ারা বেগমের মেয়ে এলিজা বেগম বাদী হয়ে আমতলী থানায় অজ্ঞাতানাম আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী নুর মোহাম্মদ মুন্সি, আবদুল মান্নান, হারুন শরীফ ও সাফিয়া বেগম বলেন, ডাক চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ঘরটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ওই ঘরের মাঝখানে মনোয়ারার পোড়া দেহ পড়ে আছে। তার দেহ থেকে মাংশ খসে পড়ছে। ওই ঘরে থাকা ধান চাল, আসবাবপত্র ও তিনটি ছাগল পুড়ে গেছে। প্রতিবেশী ফাইজুন নাহার নিপা জানান, মনোয়ারার ভাই আবদুর রাজ্জাকের ডাক চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ঘরের সবকিছু পুড়ে গেছে। মনোয়ারার পোড়া দেহ ঘরের পাশে পড়ে আছে। নিহত মনোয়ারার ছোট ভাই আবদুর রাজ্জাক অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে আমার সৎ মামা সাবেক ইউপি সদস্য সামসুদ্দিন হাওলাদারের সাথে ৫ একর জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। মামা ওই জমির জন্য আমাকে ও আমার নিহত বোনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করেছে। ওই মামলায় আমার বোন ছিল দুই নম্বর আসামী। আমার বোনকে মামা সামসুদ্দিন হাওলাদার ও তার লোকজন পরিকল্পিতভাবে ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আমিও তার ভয়ে আতঙ্কিত। যেকোন সময় আমাকেও হত্যা করতে পারে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। মামলার বাদী নিহতের মেয়ে এজিলা বেগম বলেন, “মোর মায়রে য্যারা এই রোহোম পুইড়্যা মারছে মুই হ্যাগো বিচার চাই। মোরা গরিব মানু মোগো কি বাচার অধিকার নাই”। মোর মায়রে হ্যার মামু সামসু মেম্বর মানু দিয়া পোড়াইয়্যা মারছে। মুই এইয়্যার বিচার চাই”। এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য সামসুদ্দিন হাওলাদার বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমি নির্দোষ। আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে